শুব্বান পরিচিতি
"যখন যুবকরা গুহায় আশ্রয় নিল তখন তারা বলেছিল, হে আমাদের রব। আপনি নিজ থেকে আমাদেরকে অনুগ্রহ দান করুন এবং আমাদের জন্য আমাদের কাজকর্ম সঠিকভাবে পরিচালনার ব্যবস্থা করুন।"
“কিয়ামত দিবসে চারটি বিষয়ে জিজ্ঞেস না হওয়া পর্যন্ত কোন বান্দার দুই পা অগ্রসর হতে পারবে না। এক. তার রয়স সম্পর্কে, কীভাবে তা শেষ করেছে? দুই. তার যৌবন সম্পর্কে, কীসে তা অতিবাহিত করেছে? তিন. তার সম্পদ সম্পর্কে, কীভাবে তা অর্জন করেছে ও কোথায় তা খরচ করেছে? চার. এবং তার ‘ইলম সমপের্কে’, সে অনুসারে কতটুকু আমল করেছে?
শুব্বান পরিচিতি
হে যুবক! তোমার পরিচয় জানো কি?
মহান আল্লাহর সুন্দরতম সৃষ্টি মানুষ, অপর দিকে মানুষ মহান আল্লাহর দাস। বিশ্বের সব আয়োজন, সব নিয়ামত এই মানুষেরই প্রয়োজনে। মানুষ বিশ্বের সব আয়োজন, সব নিয়ামত এই মানুষেরই প্রয়োজনে। “তিনি সেই সত্তা যিনি তোমাদের কল্যাণে পৃতিবীর সবকিছু সৃজন করেছেন” (সূরা আল-বাকারাহ,২:২৯)। অতএব, মহান আল্লাহর ‘ইবাদত করাই মানুষের মৌলিক কাজ। প্রসঙ্গত আল্লাহ তা‘আলা বলেন- “আর আমি মানুষ ও জিন জাতিকে কেবল আমার ‘ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি।” (সূরা আয্ যারিয়াত, ৫১:৫৬)
পুথিবীতে মহান আল্লাহর প্রতিনিধি
মানুষের আর একটি গর্বিত কিন্তু দায়িত্বপূর্ণ পরিচয় হলো, সে আল্লাহর মনোনীত প্রতিনিধি। মহান আল্লাহ এ সম্বন্ধে বলেন-"স্মরণ করো! যখন তোমার প্রতিপালক ফিরিশতাদের বললেন, আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি সৃষ্টি করতে চাই।" (সূরা আল বাক্বারাহ্, ২:৩০) ব্যক্তি ও সমাজের সর্বস্তরে আল্লাহ প্রদত্ত বিধানের যথাযথ অনুসরণ ও বাস্তবায়নই তার সার্বক্ষণিক দায়িত্ব। বস্তুত এ দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনের ওপরই নির্ভর করছে আমাদের ইহকালীন এবং পরকালীন সাফল্য।
শ্রেষ্ঠ নবীর (সা.) উম্মাত শ্রেষ্ঠ জাতির সদস্য
মানবতার শিক্ষক নবী-রসূলগণ যুগে যুগে মহান আল্লাহর মনোনীত জীবনব্যবস্থা ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠার মহান দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে আঞ্জাম দিয়ে গেছেন। সে ধারাবাহিকতায় সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক ও সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ-এর মাধ্যমে আমরা পেয়েছি পূর্ণাঙ্গ ও সর্বজনীন জীবনব্যবস্থা 'আল-ইসলাম'। যেমনটি মহান আল্লাহর ঘোষণা- "আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার নেয়ামত পরিপূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য জীবনব্যবস্থা হিসেবে ইসলামকে মনোনীত করলাম" (সূরা আল-মায়িদাহ, ৫:৩)। আর এ জীবনব্যবস্থা অনুসরণ করেই উম্মাতে মুহাম্মাদী সর্বকালের সেরা জাতির মর্যাদা প্রাপ্ত হয়েছে। সেইসাথে সমাজ সংস্কারের মতো বিশেষ দায়িত্ব পালনের জন্য নিযুক্ত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন- "তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি। মানব জাতির (কল্যাণের) জন্যই তোমাদের আবির্ভাব। তোমরা সৎকাজের আদেশ করবে, অসৎ কাজে বাধা দিবে এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখবে।" (সূরা আ-লে 'ইমরান, ৩: ১১০)। শ্রেষ্ঠ জাতির মৌলিক দায়িত্ব বা করণীয় এখানে স্রষ্টা নির্ধারণ করে দিয়েছেন।
উম্মাতে মুহাম্মাদী মধ্যপন্থী জাতি
মহান আল্লাহ বলেন- "এভাবেই আমি তোমাদেরকে এক মধ্যপন্থী জাতিরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছি, যাতে তোমরা মানব জাতির জন্য সাক্ষীস্বরূপ হও আর রসূল তোমাদের জন্য সাক্ষী হন।" (সূরা আল-বাক্বারাহ্, ২:১৪৩)
মমূলনীতি: ঐক্যবদ্ধভাবে আল্লাহর বিধান অনুসরণ
মধ্যপন্থী এ জাতির শ্রেষ্ঠ ও মৌলিক দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা এবং কুরআন-সুন্নাহর খালেস অনুসরণ। মহান আল্লাহর নির্দেশও তাই- "আর তোমরা সবাই আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরো এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না।" (সূরা আ-লে 'ইমরান, ৩: ১০৩) সুতরাং বিভিন্ন দলে-উপদলে বিভক্ত না হয়ে এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাব পরিহার করে শেকড়ের টানে তোমাকে ছুটে আসতেই হবে।
কর্মপদ্ধতি: কুরআন এবং সুন্নাহ
বিদায় হজ্জের ঐতিহাসিক ভাষণে মহানবী নিরন্তর পথ নির্দেশনার কথা স্মরণ করিয়ে দেন-উম্মাহকে এক "আমি তোমাদের জন্য দু'টি জিনিস রেখে গেলাম। এ দু'টি জিনিস গ্রহণ করার পর তোমরা কখনো বিভ্রান্ত হবে না। সে দু'টি জিনিস হলো, আল্লাহর কিতাব (আল-কুরআন) এবং আমার সুন্নাত।" (মুসতাদরাক হাকিম- হা: ৩১৯)
এক অনন্য সভ্যতার উত্তরসূরি
বস্তুত কুরআন ও সুন্নাহ এ দু'টি মহাসনদের নিঃশর্ত অনুসরণই ইসলাম। মহানবী এবং খুলাফায়ে রাশেদীনের সোনালি যুগে মুসলিম জাতি এ দু'টি তুহফার যথাযথ মূল্যায়নের মাধ্যমে বৈষয়িক এবং আত্মিক উন্নতির চরম শিখরে আরোহণ করেছিল। তাওহীদ এবং সুন্নাহর ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠা করেছিল বিশ্বের বৃহত্তম সাম্রাজ্য এবং গৌরবোজ্জ্বল এক কালজয়ী সভ্যতা। আমরা সেই অনন্য সভ্যতার উত্তরসূরি।
আহলুল হাদীস: দ্বীনে হক্কের অতন্দ্র প্রহরী
আহলুল হাদীস বা আহলে হাদীস অর্থ কুরআন ও হাদীসের অনুসারী। এরা মুসলিমদের মধ্যে সেই সত্যপন্থী জামা'আত যারা কুরআন ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে ধারণ করে এবং এ দুই মূল উৎসকে মানব রচিত সকল মতবাদের উপরে প্রাধান্য দেয়ার ব্যাপারে সাহাবা ও তাবেঈন-এর আদর্শ অনুসরণ করেন- তা 'আকীদাহ্, 'ইবাদত, মু'আমালাত, আখলাক, রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি ও সংস্কৃতি যে ক্ষেত্রেই হোক না কেন। দ্বীনের উসূল (মৌলিক ভিত্তি) ও শাখার সকল ক্ষেত্রেই তারা কুরআন-সুন্নাহর ওপর অবিচল থাকেন। আহলে হাদীসগণ নবী থেকে লব্ধ 'ইলম অন্যের নিকট পৌঁছানোর দায়িত্ব পালন করছেন এবং এ বিষয়ে তারা চরমপন্থীদের অনভিপ্রেত পরিবর্তন, বাতিলপন্থীদের অন্যায় সংযোজন ও মূর্খদের অপব্যাখ্যা প্রতিহত করে আসছেন। ইসলামী চিন্তাবিদদের নিকট এরা কখনও আহলুল হাদীস, কখনও আসহাবুল হাদীস আবার কখনও মুহাম্মাদী বা সালাফী নামে অভিহিত হয়ে আসছেন।
যুবক! আমাদের ভাবতেই হবে
এ পৃথিবী কারো আসল ঠিকানা নয়। মৃত্যুর পর আখিরাতের অনন্ত জীবনে প্রবেশ করতে হবে। হাশরের ময়দানে ভয়াবহ বিচার দিবসে মহান আল্লাহর নিকট প্রতিটি কাজের হিসাব দিতে হবে। সেদিন নিজের সৎকর্ম ব্যতিত অন্য কিছু কারো কোনো উপকারে আসবে না। সৎকর্মশীলরা লাভ করবে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং সেইসাথে চির শান্তি-সুখের নীড় 'জান্নাত'। অথচ দুষ্কর্মশীলরা পাবে নিকৃষ্টতম ভয়াবহ আবাস 'জাহান্নাম'। সেই জগতে সফল হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পাথেয় সংগৃহীত হয়েছে কি?
আমাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য
মূল লক্ষ্য:
কালেমা "লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ"-কে যথাযথ উপলব্ধি করত জীবনের সর্বস্তরে কুরআন ও সুন্নাহর বিধান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন।
পাঁচ দফা কর্মসূচি:
আকীদাহ সংশোধন:
তাওহীদ ও রিসালাতে মুহাম্মাদী সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানার্জন ও অনুশীলন।
দাওয়াহ ও তাবলীগ:
ছাত্র ও যুব সমাজের নিকট ইসলামের দাওয়াত প্রদান।
সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা:
ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করা।
শিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ:
যুব শক্তিকে সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে ইসলামের মূলনীতি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানদান।
সমাজ সংস্কার:
অনৈসলামিক রীতিনীতি প্রতিহত করে কুরআন-সুন্নাহভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা।
যোগাযোগ
জমঈয়ত শুব্বানে আহলে হাদীস বাংলাদেশ
৭৯/ক/৩, উত্তর যাত্রাবাড়ি, ঢাকা-১২০৪
মোবাইল: ০১৭৬৫-৮১২২৬১, ০১৯৫৫-৬০০৫২৩
ইমেইল: [email protected]
ওয়েবসাইট: www.shubbanbd.org